চৌধুরী গোল্ড জুয়েলারির
উৎসবে আফগানে মেয়েরা এখনো পরেন প্রচুর গয়না। প্রাচীন মুদ্রা, তামার ওপর মূল্যবান পাথর ও রঙের ব্যবহার, বর্ণিল কাচ, এমব্রয়ডারি, প্রিন্ট মোটিফের কাজ, এনামেলিং, কাটওয়ার্ক, আয়না, পম পম, রঙিন কাপড়-সুতা, কখনো আবার পুঁতি, গাছের শক্ত অংশ, মাটি—এসব দিয়ে তৈরি বহু বছরের সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে এসব গয়নায়।
আফগানিস্তানের গয়নায় বহু বছর ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে উজ্জ্বল নীল রঙের মূল্যবান পাথর লাপিস লাজুলি ও কোয়ার্টজ। জ্যোতির্বিদ্যায় এ দুটি পাথর সৌভাগ্য, প্রতিরক্ষা ও প্রশান্তির জন্য আদৃত। বর্তমানে এসব গয়না আন্তর্জাতিক ফ্যাশনের নতু ট্রেন্ড হয়েছে। নরমাল জিনস-টপস থেকে শুরু করে স্যুট, জ্যাকেট, শার্ট, স্কার্ট, কুর্তি-ফতুয়া, কাফতান, গাউন সব ধরনের আউটফিটের সাথে আফগান গয়না বেশ মানায়ও। এসব স্টাইল আমাদের দেশে কখনো ট্রাইবাল কখনো বোহো, কখনো এথনিক স্টাইল হিসেবেই পরিচিত।
আফগান মেয়েদের গহনার উৎসঃ
আফগানিস্তানের নানা ধরনের গয়নার মধ্যে যাযাবর ধারার গয়নার মূল উৎস হিসেবে ধরা হয় ‘কুচি’ গোষ্ঠীর গয়নাকে। হাতে তৈরি আর চমৎকার কাজ করা গয়না তৈরি করে তারা নিজেদের পরার জন্যই। ফারসি ‘কচ’ শব্দের অর্থ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ঘুরে বেড়ানো। এককথায় যাযাবর বলাই শ্রেয়। কুচিরা প্রকৃতই যাযাবর ব্যবসায়ী শ্রেণির। মধ্য এশিয়া, বিশেষত আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যবর্তী অঞ্চলেই এদের বসবাস। কুচিরা স্বাধীনতা উপভোগ করতে পছন্দ করে। বছরের পর বছর ভবঘুরে জীবন যাপন করার কারণে বিভিন্ন অঞ্চলের সভ্যতা-সংস্কৃতি তাদের প্রভাবিত করেছে। সেই প্রতিফলন সুস্পষ্ট তাদের গয়নায়।
গহনার ধরণঃ
গলার হার, মালা, নেকলেস, চোকার, মাথাপাট্টি, চুলের অলংকার, কানের দুল, নাকফুল, হাতের চুড়ি, বাজুবন্ধ, কোমরবন্ধ, হাত ও পায়ের আংটি, ব্রেসলেট, নূপুরসহ নানা ধরনের গয়না তারা সব সময় ব্যবহার করে। তারা অনেক বেশি গয়না পরে থাকে। বিশেষ করে বিয়ের সময় কুচি মেয়েরা সবচেয়ে বেশি গয়না পরে। এই গয়না পরা নিয়েও রয়েছে তাদের বিশ্বাস। কারণ, তারা মনে করে, এসব গয়না বৈরী আবহাওয়া ও মন্দ আত্মা থেকে তাদের রক্ষা করবে। তাদের বেশির ভাগই গয়নাতেই থাকে ঝুলন্ত পুঁতি, মুক্তা, মুদ্রা, ছোট ছোট ঝুনঝুনি। এগুলো হালকা নড়াচড়াতেই আওয়াজ হয়, যা প্রত্যন্ত জনমানবহীন মরু অঞ্চলে তাদের অস্তিত্বকে জানান দেয়। তা ছাড়া অলংকার তাদের আত্মবিশ্বাসকে মজবুত করে বলে ধরে নেওয়া হয়।
চৌধুরী গোল্ড জুয়েলারি তৈরি করা হয়েছে আগের পুরনো দিনের গয়নার অনুকরণে
পুরনোর গয়না ডিজাইনের প্রেরণায় তৈরি হালের ট্রেন্ডি নেকলেস
আধুনিক ডিজাইনে রয়েছে ফেরে আসা সময়ের প্রেরণা
পশ্চিমা দেশগুলোতে ভারী, মোটা, জটিল ডিজাইনের গয়নার কদর ইদানীং বেশ বেড়েছে। জিনসের সঙ্গে সঙ্গে মোটা কাফ, ব্রেসলেট, আংটি আবার স্কার্ট-টপসের সঙ্গে দামি পুঁতি ও পাথরের মালা আজকাল ইনফ্লুয়েন্সার ও মেকআপ আর্টিস্টদের বেশ পছন্দের। এ ছাড়া ফেসটিভ লুকের জন্য আফগান মাথাপাট্টি সবচেয়ে জমকালো। সিলভার বা অন্য মেটালের ওপর বর্ণিল পাথর ও নানা রঙের পুঁতির কাজ, বাহারি ডিজাইন, হালকা মেকওভারেও আড়ম্বরপূর্ণ দেখায়। তা ছাড়া ফিউশন স্টাইলে নিজেকে সাজাতে চাইলে এই জুয়েলারিগুলো সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে; কেননা ক্যাজুয়াল থেকে বোহো বা ফরমাল থেকে বোরক স্টাইলে বেশ মানানসই। কারণ, এমন স্টাইলই ১৬০০ থেকে ১৭৫০ পর্যন্ত ইউরোপকে মাতিয়ে রেখেছিল।
পুরনো গয়নার আদলে তৈরি ট্রেন্ডি গয়না। এসব গয়না যত্ন করে রাখলে বহুদিন সংরক্ষণ করা যায়। অনেক বছরেও নষ্ট হয় না। ধাতব গয়নাগুলো পরিষ্কারের জন্য ভারী ক্যামিকেল ব্যবহার না করাই ভালো। পানিতে হালকা ক্ষারবিহীন সাবান ব্যবহার করে ব্রাশ দিয়ে আলতোভাবে পরিষ্কার করাই উত্তম। এরপর মাইক্রোফাইবার–জাতীয় কাপড় দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। শুকিয়ে গেলে এমন বক্সে রাখতে হবে যেন বেঁকে না থাকে।
এত যুগ পেরিয়ে আবারও নানা ধরনের আফগান ক্র্যাফট ও জুয়েলারির ব্যবহার চৌধুরী গোল্ড সক্রিয়তার যুগের সেই অভিজাত্য ও সমৃদ্ধিকেই পুনরায় স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।
Afghan er jewelry pattern ta Khub valo, Jeta akhon Bangladesh dekha Jai.....
ReplyDelete